আলুর চপ ,সিঙারা ,বেগুনি , চানাচুর , পিয়াজ লঙ্কা দিয়ে মাখা মুড়ি খাবার হিড়িক

18th January 2021 4:48 pm বাঁকুড়া
আলুর চপ ,সিঙারা ,বেগুনি , চানাচুর , পিয়াজ লঙ্কা দিয়ে মাখা মুড়ি খাবার হিড়িক


দেবব্রত মন্ডল ( বাঁকুড়া ) : বাঁকুড়ার প্রেমের কথা অনেকেরই জানা। কিন্তু তা বলে মুড়ি নিয়ে আস্ত একটা মেলা বোধহয় চোখে না দেখলে বিশ্বাস হয় না। শীতের রোদে খোলা আকাশের নীচে দ্বারকেশ্বরের চর যেন 'মুড়িময়'। কয়েক হাজার মানুষের আবেগ আর উন্মাদনার এমনই ছবি ফি বছর মাঘের ৪ তারিখ লেন্সবন্দি হয় বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়া গ্রামে। দ্বারকেশ্বরের চরে বসে মুড়ি খেতেই সেখানে মানুষের ঢল নামে বছরের এই দিনটায়। যেমন নামল সোমবার।আশপাশের এলাকার ৫০-৬০টি গ্রামের মানুষ এ দিন জড়ো হন কেঞ্জাকুড়ায়। উপচে পড়া ভিড় বুঝিয়ে দেয় সংখ্যাটা চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ হাজারের কম কিছুতেই নয়। পরিবার পরিজন নিয়ে নদের চরে বসে মুড়ি খাওয়ার সারি সারি আসর। বাড়ি থেকে বয়ে আনা মুড়ি মাখা হয় তোয়াজ করে। নদের চরে বালির উপরে গামছা পেতে পঞ্চব্যঞ্জন সহযোগে মাখা হয় মুড়ি। মেনুতে থাকে আলুর চপ, বেগুনি, শিঙাড়া, চানাচুর, কাঁচা পেঁয়াজ আর লঙ্কা। বাদ পড়ে না টমেটো, কড়াইশুঁটি। অনকের ঝুলিতে থাকে নারকেল নাড়ু, পিঠে। নদের বালি সরিয়ে বের করা হয় জল। সেই জলেই মুড়ি মেখে চলে দিব্যি খাওয়াদাওয়া। বাঁকুড়া ১ নম্বর ব্লকে কেঞ্জাকুড়া। শহর থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে দ্বারকেশ্বর। নদের ধারে সঞ্জীবনী মাতার আশ্রম। মকর সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে সেখানে বসে হরিনাম সংকীর্তনের আসর। ফি বছর তা চলে মাঘের ১ থেকে ৪ তারিখ পর্যন্ত। আর শেষ দিন অর্থাৎ ৪ মাঘ বসে মুড়ি মেলা। কেঞ্জাকুড়ার বাসিন্দা জয়ন্ত কর জানালেন, ১৫০ বছরের বেশি এই প্রাচীন মেলার আড়ম্বর বেড়েছে গত ৩০ বছরে। আশ্রমের আশপাশের এলাকা এক সময় ছিল ঘন জঙ্গলে ঢাকা। দূরদূরান্ত থেকে আসা ভক্তরা হরিনাম সংকীর্তন শুনে সন্ধ্যার পরে আর বাড়ি ফিরতে পারতেন না। সঙ্গে করে বেঁধে আনা মুড়ি বাতাসাই ছিল তাঁদের ভরসা। সেই রেওয়াজই ধীরে ধীরে মেলার চেহারা নিয়েছে।'এই মেলা জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে বহু দূর দূরান্তের মানুষেরা হাজির হয় এই দারকেশ্বর নদীর তীরে মিলন মেলা রূপ ধারণ করে। মেলায় হাজির হওয়া গ্রামবাসীদের জন্য এ দিন দুপুরে খিচুড়ি প্রসাদের ব্যবস্থা থাকে সঞ্জীবনী মাতার আশ্রমে। দ্বারকেশ্বরে স্নান সেরে নদের চরে চলে খিচুড়ি প্রসাদ খাওয়া। উৎসব চলে গোটা দিন। ফের একটা বছরের অপেক্ষা নিয়ে পড়ন্ত বিকেলে নিজের নিজের গ্রামের পথে পা বাড়ান আট থেকে আশি।

 





Others News

মল্লরাজ ভূমিতে তোপধ্বনিতে অষ্টমীর সন্ধিক্ষণ : পুজো ঘিরে উন্মাদনা

মল্লরাজ ভূমিতে তোপধ্বনিতে অষ্টমীর সন্ধিক্ষণ : পুজো ঘিরে উন্মাদনা


দেবব্রত মন্ডল ( বাঁকুড়া ) : তোপধ্বনি তে কেঁপে উঠল বিষ্ণুপুর । শুরু হল মল্ল রাজাদের ১০২৫ বছরের অষ্টমী পূজোর সন্ধিক্ষণ।

প্রাচীণ ঐতিহ্য ও পরম্পরা মেনে আজও নিষ্ঠাভরে বিষ্ণুপুর রাজ বাড়িতে দেবী দুর্গা 'মৃন্ময়ী নামে পূজিতা হন। জানা গিয়েছে, পূর্ব প্রথা মতোই প্রাচীণ রীতি মেনে মহাষ্টমীর সন্ধিক্ষণে কামান দাগার মধ্য দিয়ে বিষ্ণুপুর রাজ বাড়িতে শুরু হয়ে গেল 'বড় ঠাকরুনে'র পুজো। তবে এবার করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও দর্শক সাধারণের উপস্থিতি ছিল বাঁধভাঙ্গা। সরকারী নিয়মকে মান্যতা দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুরু হয়েছে দেবী বন্দনা। এমনকি এখানে কামান দাগার পর্বেও অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছরে অল্প সংখ্যক লোককে নিয়ে ঐ কাজ সম্পূর্ণ করা হয়েছে।

শুরুর সময় থেকে অষ্টমীর সন্ধিক্ষণ ঘোষণা করা হয় বড় কামানের গর্জনের শব্দে। যার আওয়াজে রাজবাড়িতে আরতি নৃত্যও শুরু হয়ে যায়।